সুরা নমলে হজরত সোলায়মান (আ.) ও রানী বিলকিস এর ঘটনা

সোলায়মান (আ.) ও রানী বিলকিস এর ঘটনা

কোরানে বিলকিস নামে এক শক্তিশালী রাণীর গল্প আছে যিনি একটি বড় রাজ্য শাসন করতেন। হযরত সুলায়মান (আঃ) তার রাজত্ব সম্পর্কে জানতেন না যতক্ষণ না তার পাখি হুদহুদ তাকে জানায়। সুলায়মান (আঃ) বিলকিসকে তার কাছে আত্মসমর্পণ করতে বললেন। এই ঘটনাটি কুরআনে সূরা নামলে উল্লেখ করা হয়েছে।

কোরানে হুদহুদ দ্রুত এসে সবাইকে বলেছিল যে তার কাছে সাবা নামক স্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ খবর আছে। তিনি একজন রাণীকে দেখলেন যার অনেক ক্ষমতা ও ধন-সম্পদ ছিল, কিন্তু সে এবং তার লোকেরা আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যের উপাসনা করছিল।শয়তান নামক মন্দ আত্মা মানুষকে ভুল কাজ করার জন্য প্ররোচিত করে এবং যা সঠিক তা থেকে দূরে রাখে। এটি তাই তারা আল্লাহর উপাসনা করে না, যিনি আমাদের সম্পর্কে সবকিছু জানেন, এমনকি আমাদের গোপনীয়তাও জানেন।আল্লাহ নামে একজনই আল্লাহ আছেন যিনি সবকিছুর অধিপতি। শলোমন পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন যে শিবার রাণী সত্যবাদী কিনা, তাই তিনি তাকে তার নাম এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি বার্তা সহ একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। রানী অবাক হয়ে বার্তা নিয়ে আলোচনা করার জন্য তার উপদেষ্টাদের জড়ো করলেন।

অহংকার করো না এবং আমার অবাধ্য হয়ো না, বরং আমি যা বলি তা শোন এবং কর। বিলকিস তার কাউন্সিলের কাছ থেকে পরামর্শ চেয়েছিলেন, বলেছিলেন যে তিনি যা সিদ্ধান্ত নেন, তিনি তাদের সাথে করেন। তারা বলেছিল যে তারা শক্তিশালী এবং শক্ত, কিন্তু বিলকিসের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। বিলকিস ব্যাখ্যা করেছিলেন যে রাজারা যখন একটি শহরে আসে, তারা সমস্যা সৃষ্টি করে এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের লজ্জা দেয়। তিনি রাজার কাছে উপহার পাঠাবেন এবং দূতরা কী নিয়ে ফিরে আসবেন তা দেখার সিদ্ধান্ত নিলেন।
রানী বিলকিস সুলাইমান এর 


দূত সোলায়মানের কাছে এলে সোলায়মান বলল, ‘তোমরা কি আমাকে ধনসম্পদ দিয়ে সাহায্য করতে চাও? আল্লাহ তোমাদের যা দিয়েছেন তার চেয়ে উত্তম জিনিস দিয়েছেন আমাকে, অথচ তোমরা তোমাদের উপঢৌকন নিয়ে উৎফুল্ল বোধ করছ।... তোমরা ওদের কাছে ফিরে যাও, আমি অবশ্যই ওদের বিরুদ্ধে এমন এক সৈন্যবাহিনী নিয়ে উপস্থিত হব, যা রুখবার শক্তি ওদের নেই। আমি ওদেরকে সেখান থেকে অপমান করে বের করে দেব ও ওদেরকে দলিত করব।’ সোলায়মান আরও বলল, ‘হে আমার পারিষদবর্গ। তারা আমার কাছে আত্মসমর্পণ করতে আসার পূর্বে তোমাদের মধ্যে কে তার সিংহাসন আমাকে এনে দেবে?’ এক শক্তিশালী জিন বলল, ‘আপনি আপনার স্থান থেকে ওঠার আগেই আমি তা এনে দেব। এ ব্যাপারে আমি এমন শক্তি রাখি। আর আমাকে বিশ্বাস করতে পারেন।’ কিতাবের জ্ঞান যার ছিল সে বলল, ‘আপনি চোখের পলক ফেলার আগেই আমি তা এনে দেব। সোলায়মান যখন তা সামনে রাখা দেখল, তখন বলল, এ আমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ, যাতে তিনি আমাকে পরীক্ষা করতে পারেন, আমি কৃতজ্ঞ না অকৃতজ্ঞ। যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সে তা নিজের জন্য করে, আর যে অকৃতজ্ঞ সে জেনে রাখুক যে আমার প্রতিপালকের অভাব নেই, তিনি মহানুভব।’ সোলায়মান বলল, ‘তার সিংহাসনের আকৃতি বদলে দাও; দেখি সে ঠিক ধরতে পারে, নাকি ভুল করে।’ বিলকিস যখন পৌঁছাল, তখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘তোমার সিংহাসন কি এ রকম?’ সে বলল, ‘এ তো এ রকমই। আমরা আগেই সবকিছু জেনেছি ও আত্মসমর্পণও করেছি।’ আল্লাহর পরিবর্তে সে যার পূজা করত, তা-ই তাকে সত্য থেকে সরিয়ে রেখেছিল, সে (বিলকিস) ছিল অবিশ্বাসী সম্প্রদায়ের একজন। তাকে বলা হলো, ‘এই প্রাসাদে প্রবেশ করো।’ যখন সে ওটার দিকে তাকাল, তখন তার মনে হলো এ এক স্বচ্ছ জলাশয় এবং সে তার কাপড় হাঁটু পর্যন্ত টেনে তুলল। সোলায়মান বলল, ‘এ তো স্বচ্ছ স্ফটিকের প্রাসাদ।’ (বিলকিস) বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক। আমি তো নিজের ওপর জুলুম করেছিলাম। আমি সোলায়মানের সঙ্গে বিশ্বজগতের প্রতিপালকের কাছে আত্মসমর্পণ করছি।’ (সুরা নমল, আয়াত: ২২-৪৪)


Tags: 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ