হেদায়াত ( আরবি: هداية, হিদায়াহ আইপিএ: [hɪdaj.jaː] ) একটি আরবি শব্দ যার অর্থ "পথপ্রদর্শন"। ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, আল্লাহ মানুষের কাছে মূলত কুরআন আকারে হেদায়েত প্রদান করেছেন। শুধু কুরআনের মাধ্যমে নয়, হেদায়াত বা পথপ্রদর্শন মুহাম্মদ (সা) এর মাধ্যমেও প্রদান করা হয়েছে এবং তিনি যেভাবে তাঁর জীবন যাপন করেছিলেন তা নবীজীর সুন্নাহ হিসাবে পরিচিত। তাঁর শিক্ষা এবং কুরআনে দিকনির্দেশের মাধ্যমে মুসলমানরা উন্নততর জীবনধারা অর্জনের আশা করেন।[১]
‘হুদা’ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘গাইড’। কুরআনে এই গ্রন্থটিকে আল্লাহ 'আল্লাহভিরুদের জন্য হুদা/পথ প্রদর্শক' নামে উল্লেখ করেছেন।[২] ‘হুদাল্লিল মুত্তাকিন’ও (স্রষ্টার পরিচয়প্রাপ্ত মানুষের জন্য আলোর পরশ) বলেন, কারণ তিনি শুধু তাদেরকেই সাহায্য করেন যারা নিজেদেরকে সাহায্য করে।[৩]
![]() |
| হিদায়াত কাকে বলে? কিভাবে মানুষ হিদায়াত পেতে পারে? |
তথ্যসূত্র[wiki]
- ↑ Hidayah ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে অক্সফোর্ড ইসলামিক ডিকশনারি
- ↑ "কুরআনের দেখানো পথে চলুন"। Daily Nayadiganta।
- ↑ "ইজ গাইডেন্স অ্যা ডিভাইন গিফট ফর দ্যা চুজেন?"। অ্যাবাউট ইসলাম।
হিদায়াত দুই প্রকার:
(এক) হিদায়াতুত তাওফীক (হিদায়াত লাভে সক্ষমতা অর্জন করা)। আর এটা হলো পথভ্রষ্টের ক্বলবে হেদায়েতের আবির্ভাব ঘটানো। যেমন মহান আল্লাহ বলেন:
إِنَّكَ لَا تَهۡدِي مَنۡ أَحۡبَبۡتَ ﴾ [القصص
‘‘আপনি যাকে ভালোবাসেন তাকেই হিদায়াত করতে পারবে না’’। (সূরা আল-কাসাস:৫৬)
অর্থাৎ আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তাকে হিদায়াত প্রদান করার কোনোই সাধ্য নেই।
(দুই) দলীল প্রমাণ সহ হিদায়াতের পরিচয় পাওয়া বা দেওয়া। যেমন; মহান আল্লাহ বলেন:
وَإِنَّكَ لَتَهۡدِيٓ إِلَىٰ صِرَٰطٖ مُّسۡتَقِيمٖ ﴾ [الشورا
‘‘আর আপনি তো সরল-সোজা পথের সন্ধান দিয়ে থাকেন’’। (সূরা আশ-শূরা: ৫২)
সুতরাং এ প্রকারের হিদায়াতের বিষয়বস্তু আল্লাহর দীন ও শরীয়াতের প্রমাণ সহ আল্লাহর পক্ষ থেকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা সহ দূনিয়াবাসীর কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে।
তিনটি বিষয়ের ওপর পরিপূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস যার মধ্যে থাকবে সে হিদায়াত প্রাপ্ত। কেউ যদি এর কোনো একটি সম্পূর্ণ বা আংশিক অস্বীকার করে তাহলে সে হিদায়াত থেকে চিরতরে বঞ্চিত হয়ে যাবে। তাহলে যারা হিদায়াতাপ্রাপ্ত তাদের বিশ্বাস কেমন হওয়া চাই। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন-
যারা ঈমান আনে এবং স্বীয় বিশ্বাসকে শিরকের সাথে মিশ্রিত করে না, তাদের জন্যেই শান্তি এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত বা সুপথগামী। (সুরা আনআম : আয়াত ৮২)
হিদায়াতপ্রাপ্ত বা সুপথগামীরা সর্বদা তিনটি বিষয়ের ওপর স্থির থাকে। কেউ যদি এর কোনো একটিকে সম্পূর্ণ বা অস্বীকার করে তবে তার তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতের কোনো স্বীকৃতিই গণ্য হবে না।
০১. আল্লাহর কৃতকর্মে তাকে এককভাবে বিশ্বাস করা। যেমন- সৃষ্টি করা, রিযিকদান, জীবন-মৃত্যুদান, এমনকি সমগ্র বিশ্ব ও বিষয়াদি পরিচালনা।
০২. যে সব কাজের জন্য আল্লাহ তার বান্দাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তাতে তাঁর একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করা। যেমন- তারই জন্য নামাজ প্রতিষ্ঠা করা, তারই জন্য রোজা রাখা, তাঁর নামেই কুরবানি করা, নজর (মানৎ), বিপদে-আপদে তার নিকট দোয়া কামনা, আশা-ভরসা, ভয়, সাহায্য সবই তাঁর নিকট কামনা করা। এমনকি ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র পরিচালনায় বিচার ব্যবস্থা, অর্থনীতি ইত্যাদি বিষয়াদি কুরআন এবং সুন্নাহ মোতাবেক পরিচালনা করা।
০৩. কুরআন এবং সুন্নাহতে আল্লাহর যে সব গুণবাচক নাম উল্লেখিত হয়েছে সেগুলোর কোনো বিকৃতি, বিলুপ্তি, ধরণ পদ্ধতি, অপব্যখ্যা, তুলনা ও উপমা ছাড়া বিশ্বাস ও কাজে সাব্যস্ত করা। চাই গুণাবলীগুলো আচরণগত হোক বা সত্ত্বগত হোক।
.jpeg)
0 মন্তব্যসমূহ